top of page

মগ্ন কবি, ধূসর যাপন


চতুর্থ পর্ব


#১


ree

কণ্ঠার হাড় বেরিয়ে গেছে। ধনুকের ছিলার মতন বেঁকেচুরে দাঁড়িয়ে মেয়ে। দুচোখের তলায় আলকাতরার গাঢ় পোঁচ। হা হা করে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। অবিন্যস্ত রাত পোশাক। পায়ে স্লিপার। তাড়াতাড়ি ধরে ঘরে নিয়ে এলেন মেয়েকে।


----- একি চেহারা হয়েছে তোর?

----- আমি ঠিকই আছি বাপি।

----- না, ঠিক নেই একদম। ঠিক নেই। এবার আর কোথাও যেতে দেব না। আমার কাছে থাকবি। বাপ বেটিতে মিলে সুখে থাকবো।

----- ক্ষিদে পেয়েছে বাপি।


ব্রেড আনাই ছিল। ফ্রিজে সামান্য চিজও ছিল। দুটো ব্রেডের মাঝখানে সামান্য টমেটো, ধনেপাতা, কাঁচালঙ্কা কুচিয়ে, চিজ গ্রেট করে তাড়াতাড়ি মাইক্রোওভেনে সেঁকে নিলেন। একটা সানি সাইড আপ ডিমের পোচও করে নিলেন। শসা কেটে নিলেন স্লাইস করে। বড় একটা মাগে বেশ অনেকটা দুধ দিয়ে ঘন করে ফেনা ওঠা কফি বানিয়ে যখন নিয়ে এলেন মেয়ে তখন সোফার মধ্যেই গুটিসুটি হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে সেই ছোট্টবেলার মত। খাবার ট্রেটা টেবিলে ঢাকা দিয়ে রেখে জানলার পর্দা টেনে হালকা করে এসি চালিয়ে ধীরে ধীরে বেরিয়ে এলেন রথী।


ঘুমাক একটু। শান্তিতে ঘুমাক মেয়ে।


#২


মারিয়ার সাথে আলাপ রাশিয়ায় ডাক্তারি পড়তে গিয়ে। ছটফটে, সুন্দরী। রথীন্দ্র অভিজাত জমিদার বাড়ির ছেলে। স্মার্ট, টল, হ্যান্ডসাম ইন্ডিয়ানের প্রেমে পড়ে গেল মারিয়া। ইন্টার্ন থাকতে থাকতে ওখানেই বিয়ে। এদেশে এসে সে কোন মতেই মানিয়ে নিতে পারলো না নিজেকে। দ্রুত বদলে যাচ্ছিল সে। একদিন মিখাইলের সাথে আলাপ করিয়ে জানালো যে এই সম্পর্ক থেকে সে বেরিয়ে যেতে চাইছে। এমনকি মেয়ের দায়িত্বও সে নেবে না। লিভ ইন রিলেশনে থাকবে সে আর মিখাইল এবং এই দেশ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ছেড়ে দেবে।


মায়ের সাথে মেয়ের আশ্চর্য মিল। সেই চোখ, সেই মুখ আর অদ্ভুত, অন্যায় জেদ। এখনও চোখ বন্ধ করলে মারিয়ার সমুদ্রের মত চোখ দুটো দেখতে পায় সে।


ঘন ঘন কলিংবেলের শব্দ ভাবনায় বিচ্ছেদ আনলো। তড়িঘড়ি দরজা খুলে দিতে গেল রথীন্দ্র। কাজের মেয়ে দুটো এলো বোধহয়। তাছাড়া আজ কালের মধ্যে বাড়িতে বোনেরা আসবে। লোকজন, হইচই আর রাকাকে নিয়ে অনাবশ্যক কৌতূহল।মেয়েটা হট্টগোল একদম পছন্দ করে না। এসবের থেকে আড়াল করে রাখতে হবে তাকে। কোনরকম আনওয়ান্টেড পরিস্থিতির শিকার যাতে না হয় তার মেয়ে সেটা তাকেই দেখতে হবে।


★★★


(চলবে)


কলমে - পৌলোমী মুখার্জী ।

 
 
 

Comments


bottom of page